জিনসেং এর উপকারিতা এবং ক্ষতি
উত্তর চীন কোরিয়া তথা সাইবরিয়াতে পাওয়া জিনসেং কে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ হিসাবে বিচার করা হয়। একটি প্রচন্ড জনপ্রিয় পুষ্টিকর ভেষজ হিসাবে ইহাকে চৈনিক চিকিৎসায় হাজার বছর ধরে ব্যবহার করা হয়েছে। এর সুবিশাল ঔষধি গুণের জন্য ইহার ব্যবহার পশ্চিমী দেশগুলোতেও হতে থাকলো। তাহলে চলুন স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য কে প্রভাবিত করা জিনসেং এর উপকার এবং ক্ষতি সম্পর্কে জানা যাক।
- পিরিয়ডস বাঁ মসিকের সময় কালে
মহিলাদের পিরিয়ডসের সময় অনেক রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই অসুবিধা গুলি জিনসেং এর সাহায্যে কম করা যায়। যেমন এই সময় হওয়া ফোলা বা খিচুনি গুলি জিনসেং কম করে।এটি মুডও পরিবর্তন করে।
-
কগনিটিভ ক্ষমতা বাড়ায়
কগনিটিভ ক্ষমতা যেমন একাগ্রতা, স্মৃতি ইত্যাদি বাড়াতে জিনসেং এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এটি নিয়মিত সেবন করলে আপনার স্নায়বিক গতিবিধি বাড়তে পারে। জিনসেং এ থাকা থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের পট্টিকা এবং ফ্রি রেডিকল্স এর উৎপন্ন হওয়া কম করে। এর দ্বারা অনেক রকম কগনিটিভ এর ক্ষতি দূর হয়।
-
ক্যানসারের চিকিৎসা
কোলোন ক্যানসার এর সম্ভাবনা কম করতে ইহার ভূমিকা অনেক গবেষণার দ্বারা প্রমাণিত। জিনসেং এর নিয়মিত সেবন কোলোন ক্যানসারের ছড়িয়ে পড়তে আটকাতে পারে।জিনসেং এর উপর করা প্রারম্ভিক গবেষণা এর অ্যান্টি টিউমার গুণের কথা বলেছে।
-
জিনসেং এর সাহায্যে সুগারের চিকিৎসা
আজকালকার দিনে সুগার থেকে বাঁচতে বা কম করতে অনেক রকম পদ্ধতি আছে। এইসব পদ্ধতির মধ্যে জিনসেং কে সব থেকে ভালো আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে বিচার করা হয়। এর জন্য জিনসেং এর ব্যবহার খালি পেটে অথবা খাবার পরে করতে পারেন। এর ফলে রক্ত শর্করা স্তরকে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমানো যেতে পারে।
-
মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি
জিনসেং বিপাকে উত্তেজিত করে এবং উর্জার স্তর বাড়িয়ে স্নায়তন্ত্রকে প্রভাবিত করে। এর ফলে মানসিক অবসাদ যেমন চিন্তা এবং চাপ কম হয়। এছাড়াও জিনসেং এর মধ্যে এটা এডাস্টোজেন নামে এক উপাদান থাকে যা হরমোনাল স্তর বদলানোর ক্ষমতা রাখে। এর ফলে চাপও কম হয় এবং মুড ভালো হয়।
-
বয়স বাড়া থামিয়ে দেয়
জিনসেং এ প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যার ফলে পুরো শরীরে ফ্রি রেডিক্যালস এর ঋণাত্মক প্রভাব কম হয়। আপনাকে জানিয়ে দিই যে ফ্রি রেডিক্যালস হল সেলুলার বিপাকের ফলে তৈরি একটি ক্ষতিকর উপ পণ্য। ইহা সতেজ কোষগুলোর ক্ষতি করে।
-
উন্নয়নক্ষম দোষ এর চিকিৎসা
চৈনিক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাতে এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে জিনসেং ব্যবহার করা হয়। এর কারণ হলো একটি প্রভাবশালী কামোদ্দীপক। কোরিয়ার লাল জিনসেং এই কাজগুলো জন্য ব্যবহার করা হয়।
-
ওজন কম করতে
জিনসেং এ অনেক রকম রাসায়নিক উপাদান থাকে যা খাবার ইচ্ছাকে আটকে রাখে। বিশেষ করে শুকনো জিনসেং পাউডার কোনরকম খাবারের লোভ কে ট্রিগার করে খিদে পাওয়ার হরমোনকে আটকে রাখে। যার ফলে আপনার ওজন কম করতে এটি সাহায্য করে।
-
ত্বকের দেখাশোনা
আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চার কে জিনসেং উত্তেজিত করে। বিশেষ করে ত্বকের কোষগুলোতে এর বেশি প্রভাব দেখা যায়। এতে বিপাকে উত্তেজিত এবং সক্রিয় করার ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট পাওয়া যায়। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। জিনসেং এর চা আপনার ত্বককে টোন্ড এবং হাইড্রেট করে। ইহা অক্সিজেনের ঘাটতিকে পূর্ণ করে ত্বকের কোষ গুলিকে পুনর্জীবিত করে।
-
চুলের জন্য উপকারী
চুলের বিভিন্ন সমস্যা যেমনচুল পড়ে যাওয়া এবং টাক ইত্যাদিতে জিনসেং অনেক উপকারী। কারণ জিনসেং এ অনেক প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে জিনসেং চুলের দেখাশোনার জন্য অনেক প্রভাবশালী।
জিনসেং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- জিনসেং এর অত্যন্ত পরিমাণে সেবন আপনার মাথা ব্যথা, অনিদ্রা এবং পেটে সমস্যা এর মত অসুবিধা দিতে পারে।
- শক্তিশালী ভেষজ তাই এটি শরীরে অনেক ঋণাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
- এর সেবন কোন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করলে বেশি ভালো হয়।